December 21, 2024, 11:25 pm

সংবাদ শিরোনাম
আপনারা শান্তিতে থাকুন আমরা চাই,আমাদেরকেও আপনারা শান্তিতে থাকতে দিন- ডা. শফিকুর রহমান যশোরে গাছের সাথে বাসের ধাক্কায় নিহত ১ পার্বতীপুরে ঘোড় দৌড় প্রতিযোগিতা ২০২৪ অনুষ্ঠিত বাংলাভিশন ডিজিটালের নির্বাহী সম্পাদকের বিরুদ্ধে নাবিলের অপপ্রচারের প্রতিবাদ হিলিতে বিজিবি দিবসে বিএসএফকে মিষ্টি উপহার বিজিবির কুড়িগ্রামের ফুলবাড়িতে আওয়ামী লীগের নেতা গ্রেপ্তার পটুয়াখালীতে বাড়ির সীমানা নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত-৬ গভীর রাতে আশ্রায়ন প্রকল্পের শীতার্তদের পাশে হাকিমপুরের ইউএনও অমিত রায় যশোরে জামিয়া ইসলামীয়া মাদ্রাসার অনুষ্ঠানের ভিডিও নিয়ে তোলপাড় পটুয়াখালীতে রাখাইনদের ধান লুটের ঘটনা মিথ্যে দাবী করে যুবদল নেতার মানববন্ধন

পর্যটকদের ক্ষোভ, কুয়াকাটায় খাবার হোটেল মালিকদের আকস্মিক ধর্মঘট

 

পটুয়াখালী প্রতিনিধিঃ
পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর কুয়াকাটা সৈকতে পর্যটকদের সমাগম বাড়লেও
বাড়েনি খাদ্যের মান। খাবার হোটেল গুলোতে খাওয়ানো হচ্ছে পচাঁ বাসি
খাবার। তাই পর্যটকদের জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে পটুয়াখালী জেলা
প্রশাসনের পক্ষ্য থেকে মাসব্যাপী ভ্রাম্যমান আদালত অভিযান পরিচালনা করে
আসছে। ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে খাবার হোটেলগুলোতে জরিমানা করার পরও
মানহীন খাবার পরিবেশন করছে পর্যটকদের। মান সম্মত খাবার পরিবেশনে
ব্যর্থ হওয়ায় কয়েক তফা জরিমানা করা হয়। এতে ক্ষুদ্ধ হয়ে খাবার হোটেল
মালিক সংগঠন এর প্রতিবাদ জানিয়ে আজ বুধবার সকাল থেকে খাবার
হোটেল রেস্তোরা অনিদিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেয়। আর এতে ভোগান্তিতে
পরেছে আগত পর্যটকরা। কোন প্রকার আগাম নোটিশ ছাড়াই খাবার
হোটেল বন্ধ করে দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে পর্যটকরা। সকাল থেকেই খাবার
না পেয়ে ভোগান্তিতে পরেছেন তারা। এদিকে খাবার হোটেল মালিকরা
বলছেন এক মাসের মধ্যে তাদের হোটেল গুলোতে তিন থেকে চারবার জরিমানা
করা হয়েছে। রেস্তোরা বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া তাদের অন্য কোন উপায় ছিল না।
তবে কোন প্রকার আগাম আলোচনা ছাড়াই খাবার হোটেল বন্ধ রেখে
ধর্মঘট পালন করা করায় জেলা প্রশাসন, আবাসিক হোটেল মোটেল
মালিকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। পর্যটকদের ভোগান্তির কথা চিন্তা না করে
নিজেদের ইচ্ছেমত এমন হটকারী সিদ্ধান্তে পর্যটনের উপর বড় ধরনের প্রভাব
পরবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষ। এদিকে খাবার হোটেল ধর্মঘটে
ভোগান্তিতে পড়া পর্যটকদের কথা চিন্তা করে পর্যটন মোটেলের রেস্তোঁরা
সাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া যেসব আবাসিক হোটেলে
রেস্তোঁরা রয়েছে সেগুলোও খুলে দেয়া হবে বলে জানা গেছে।
বুধবার ভোর থেকে রেস্তোরা বন্ধ রেখে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের
ঘোষণা দিয়েছেন খাবার হোটেল মালিক সংগঠন। ওইসব ব্যবসায়ীদের
অভিযোগ,দফায় দফায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের নামে তাদের কাজ থেকে জরিমানা
আদায় করছেন। এদিকে প্রশাসন জানিয়েছে, নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে তাদের
তাগিদ দিলেও একই কাজ বার বার করছে। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনায় ক্ষুব্ধ
কুয়াকাটা খাবার হোটেল মালিক সমিতি সংগঠনের সভাপতি মোঃ সেলিম
মুন্সী মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) রাত ১০টায় স্থানীয় সাংবাদিকদের জানিয়ে
বুধবার সকাল থেকে খাবার হোটেল বন্ধ করে দেয়। তিনি অভিযোগ করে বলেন,
প্রতিদিন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট খাবার হোটেলে ভ্রাম্যমাণ আদালত
পরিচালনার নামে মোটা অংকের টাকা জরিমানা করে যাচ্ছে। একই
হোটেলকে একাধিকবার এই জরিমানার আওতায় নেওয়া হয়েছে। মোবাইল

কোর্টের নামে আমাদের হয়রাণি করা হচ্ছে। আমরা আর্থিকভাবে
ক্ষতিগ্রস্ত। তাই কুয়াকাটার সকল খাবার হোটেল মালিক একত্রিত হয়ে
আমাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
সংগঠনের সিনিয়র সহ সভাপতি মোঃ আলমগীর হোসেন বলেন, আমার
মালিকানাধীন আল-মদিনা নামের একটি খাবার হোটেলে গত ১১ আগস্ট ২৫
হাজার টাকা জরিমানা করেছে। ১৬ আগস্ট পুনরায় ৩০ হাজার টাকা জরিমানা
করা হয়েছে। তৎক্ষণাৎ জরিমানার অর্থ পরিশোধ করতে না পারায় আমাকে
বেশকিছুক্ষণ পুলিশ বক্সে আটকে রাখা হয়। সুদে আনা টাকা দিয়ে জেল
খাটা থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন বলেও তার মন্তব্য ছিল। খাবার হোটেল
মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ কলিম মাহমুদ বলেন, প্রশাসনের এই
হয়রানি সামাল দিয়ে আমাদের পক্ষে ব্যবসা পরিচালনা করা সম্ভব না। তাই
আমরা প্রায় ৫০টি খাবার হোটেল মালিক একমত হয়ে বুধবার (১৭ আগস্ট)
থেকে প্রতিষ্ঠান বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
এদিকে আবাসিক হোটেল মালিকদের সংগঠন কুয়াকাটা হোটেল মোটেল
ওনার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এমএ মোতালেব শরীফ বলেন,
খাবার হোটেল বন্ধ থাকা বা রাখা সমাধান নয়। পর্যটকদের স্বার্থে
ব্যবসায়ী ও প্রশাসনের এখনই সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত। মঙ্গলবার সকালে ৩০
সদস্যের একটি বহরে ঢাকার মুন্সীগঞ্জ থেকে কুয়াকাটা বেড়াতে আসা
পর্যটকরা বলেন, সকাল তেকে কিছুই খাওয়া হয়নি। সাথে পরিবারের শিশুসহ
বয়স্ক লোকজন রয়েছে, তাই এ সমস্যার দ্রæত সমাধান হওয়া জরুরী।
ঝালকাঠি থেকে আগত পর্যটক শহিদুল ইসলাম তপন বলেন, পরিবারের আট
সদস্য নিয়ে সকালে কুয়াকাটা এসে পৌচেছেন তারা। কিন্ত খাবার
হোটেল বন্ধ থাকায় তারা শিশু সন্তান নিয়ে না খেয়ে আছেন। বাচ্চারা
খাবারের জন্য কান্নাকাটি করছে। এখন কি করবো বুজতে পারছিনা।
ট্যুর গাইড এসোসিয়েশনের সভাপতি কেএম বাচ্চু বলেন, জেলা
প্রশাসনসহ স্থানীয় প্রশাসনের সাথে আলোচনা ছাড়া এমন হটকারি
সিন্ধান্ত ট্যুরিজম ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
এপ্রসংঙ্গে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসনাত মোঃ
শহিদুল হক বলেন,পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটায় রে¯েঁÍারা মালিকদের আকস্মিক
ধর্মঘট ডাকাটা অযৌক্তিক। পর্যটকদের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত খাবার
পরিবেশনের গুরুত্বে কুয়াকাটায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়।
জরিমানা করার পরও খাবার হোটেল মালিকরা পর্যটকদের পচাঁবাসি খাবার
পরিবেশন করছে। খাবার হোটেল মালিকরা তাদের যৌক্তিক দাবি থাকলে জেলা
প্রশাসককে জানাতে পারেন।

Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর